Book Review: "Rich Dad Poor Dad" by Robert Kiyosaki

Affiliate Disclosure : This post contains affiliate links, which means we earn a commission if you purchase through these links. Thank you for supporting our site! Book Review: "Rich Dad Poor Dad" by Robert Kiyosaki A Financial Game-Changer for Entrepreneurs. Rating: 5/5 stars Introduction In the world of personal finance, few books have made as significant an impact as Rich Dad Poor Dad by Robert Kiyosaki. First published in 1997, this groundbreaking book offers insights into wealth-building that challenge conventional beliefs about money and education. If you're looking to reshape your financial future, this book might just be the catalyst you need. Overview of the Book Rich Dad Poor Dad contrasts the financial philosophies of Kiyosaki's two father figures: his biological father (the "Poor Dad"), who believed in traditional education and job security, and his best friend’s father (the "Rich Dad"), who advocated for financial literacy, investing

মানবতাবাদ সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের অভিমত কী?

মানবতাবাদ সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের অভিমত


রবীন্দ্রনাথের কাছে মানবধর্মের অর্থ হল মানবতাবাদ। এই মানবধর্ম তথা মানবতাবাদকেই তিনি অত্যন্ত জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন তাঁর রচনাবলির মাধ্যমে। এ কথাই তিনি অত্যন্ত যুক্তিনিষ্ঠভাবে প্রমাণ করতে চেয়েছেন তাঁর 'মানুষের ধর্ম' নামক প্রবন্ধে এবং 'Religion of Man' নামক গ্রন্থে। মানবতাবাদ সম্পর্কিত রবীন্দ্রনাথের অভিমতকে প্রদত্ত আলোচনার মাধ্যমে উল্লেখ করা যায়-

মানবধর্ম: রবীন্দ্রনাথের মতে, মানবতাই হল মানুষের ধর্ম। রবীন্দ্রনাথের আগে অনেকেই মানবতাবাদের কথা বললেও রবীন্দ্রনাথই হলেন প্রথম চিন্তানায়ক যিনি মানবতাবাদকে মানুষের প্রকৃত ধর্ম হওয়া উচিত, এই অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তাঁর পূর্বে বৌদ্ধ, খ্রিস্ট, ইসলাম এবং হিন্দুধর্মের গ্রন্থগুলিতেও মানবতাবাদের পরিচয় পাওয়া যায়। প্রখ্যাত দৃষ্টিবাদী কোঁতের দর্শনেও মানবতাবাদের পরিচয় পাওয়া যায়। মানবতাবাদের পরিচয় পাওয়া যায় কবিরের দোঁহাতে, গুরু নানকের বাণীতে, রজ্জাব ও রুইদাসের গাঁথামালাতেও। পরবর্তীকালে মানবতাবাদের ধারণাটি আরও সংহত হয় বঙ্কিমচন্দ্র, রামমোহন, মহাত্মা গান্ধি, রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব এবং বিবেকানন্দ প্রমুখ মহামনীষীদের নানান বাণী ও লেখায়। কিন্তু মানবতাবাদ যে মানুষের ধর্মরূপে গড়ে উঠতে পারে, তা সম্ভবত রবীন্দ্রনাথই সর্বপ্রথম যুক্তিনিষ্ঠভাবে প্রমাণ করে গেছেন।

দ্বিবিধ সত্তায় মানুষ: রবীন্দ্রনাথ মানুষের মধ্যে দুটি সত্তাকে উপলব্ধি করেছেন। একটি হল তার জীবসত্তা এবং অপরটি হল তার মানবসত্তা। এই মানবসত্তাকেই তিনি পরমসত্তার পর্যায়ে উন্নীত করেছেন। এই দুটি সত্তাকেই তিনি স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেছেন তাঁর 'মানুষের ধর্ম' নামক প্রবন্ধে। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, মানুষ জীবরূপে বাঁচতে চায় তার জৈবিক ও ব্যাবহারিক স্বার্থসিদ্ধির জন্যই। এই জৈবিক ও স্বার্থজড়িত কামনাই হল মানুষের জীবসত্তা। জীবসত্তার সঙ্গে তাই জড়িত হল জীবভাব।

দুর্লভ সত্তারূপে মানবসত্তা: মানুষের নিজস্ব স্বার্থজড়িত কামনাই শুধু তার পরিচয় নয়। এর বাইরেও মানুষের এক দুর্লভ সত্তা বিদ্যমান, যে কারণে মানুষের মধ্যে জন্ম লাভ করে 'মনুষ্যত্ববোধ'। মানুষ শুধুমাত্র তার জীবসত্তা নিয়েই বাঁচতে চায় না। মানুষ চায় এক ব্যাপক পরিচয় নিয়ে বাঁচতে এবং তা হল নিজেকে মনুষ্যত্ববোধে দীক্ষিত করা। এই অনেক বড়ো পরিচয়ের আকাঙ্ক্ষাই মানুষকে তার মানবসত্তায় উদ্বুদ্ধ করে এবং যার স্ফুরণ ঘটে মানবতাবাদের মাধ্যমে। 

দ্বিবিধভাবে মানুষ: রবীন্দ্রনাথ আরও উল্লেখ করেন যে, মানুষের জীবসত্তা ও মানবসত্তা-র মধ্যে দুটি ভাব আছে জীবভাব ও বিশ্বভাব। জীবভাব, ব্যক্তিজীবের মধ্যেই আবদ্ধ। কিন্তু বিশ্বভাব ব্যাক্তিজীবকে তার আত্মস্বার্থের সীমা পেরিয়ে পরমসত্তার সীমানায় উত্তরণ করতে সক্ষম। মানুষের মধ্যে এই যে বিশ্বভাব, তা মানবসত্তারই প্রকাশ। জীবসত্তার সমাপ্তি ঘটে মানুষের মৃত্যুতে, কিন্তু মানবসত্তার কোনো মৃত্যু নেই। এই মানবসত্তা হল চির অমলিন ও শাশ্বত। মানুষের প্রকৃত মূল্যবোধ থেকেই আসে বলে, মানবসত্তা মানবসমাজের আলোক-দিশারীরূপে গণ্য হয়। জীবভাবে মানুষ নিজেকে নিয়েই নিজে ব্যস্ত থাকে, কিন্তু বিশ্বভাব নিয়ে যে মানবসত্তা বিরাজমান, তা অন্তরের নির্দেশে এবং আদর্শের আলোকে উদ্ভাসিত। এর ফলে ব্যক্তিমানুষ মানবতাবাদের উপহার নিয়ে বিশ্বমানবের দরবারে হাজির হয়।

'অহং' থেকে 'বিশ্বআত্মা'-য় উত্তরণ: রবীন্দ্রনাথ আরও বলেন যে, মানুষের জীবভাব অহং-এর সঙ্গে তুলনীয়, কিন্তু বিশ্বভাব আত্মার সঙ্গে তুলনীয়। অহং হল প্রদীপস্বরূপ, কিন্তু আত্মা হল শিখাস্বরূপ। শিখা শুধু নিজেকেই প্রকাশ করে না, তা একই সঙ্গে তার বাইরের অন্যান্য অনেক কিছুকেই প্রকাশিত করে। শিখা তাই প্রদীপের ক্ষুদ্র গণ্ডির সীমাকে অতিক্রম করে প্রবেশ করে বিশ্ব নিখিলের মধ্যে। মানুষের আত্মা এভাবেই যখন বিশ্বচেতনার দীপশিখাকে প্রজ্জ্বলিত করে, তখন ধ্বংস হয়ে যায় তার অহং- এর ক্ষুদ্র গণ্ডি। সেই আলোকেই দেখা যায় যে, এই বিশ্বে ব্যক্তিমানুষের অস্তিত্ব অতি নগণ্য। 

বিশ্বসত্তার উপলব্ধিতে মানবতাবাদ: ক্ষুদ্র ব্যক্তিসত্তাকে অতিক্রম করে বিশ্বসত্তায় পৌঁছোনোর চেষ্টা করা উচিত। এরূপ চেতনাই হল মানুষের প্রকৃত ধর্ম, যা মানুষকে ঐক্যমন্ত্রে দীক্ষিত করে। এভাবেই দেখা যায় যে, রবীন্দ্রনাথ তাঁর মানবতাবাদের বীজটি ব্যক্তিমানুষে প্রোথিত করে তাকে ফুলে-ফলে বিকশিত করে হাজির করেছেন বিশ্বমানবতাবাদের দরবারে। এখানে দেবতা বা ঈশ্বরের কোনো ঠাঁই নেই, আছে শুধু মানুষের ঠাঁই। ঈশ্বর বা দেবতার বেদীতে তিনি মানুষকেই নরনারায়ণ তথা জীবন দেবতারূপে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

আদর্শ ধর্ম হিসেবে মানবতাবাদ: রবীন্দ্রনাথের মতে, আদর্শ ধর্ম হল মানবতা বা মানবতাবাদ, যা মানব ধর্মকেই সূচিত করে। এরূপ ধর্ম হল পরমসত্তার বোধ, যা বিশ্বমানব চেতনায় মূর্ত হয়ে ওঠে। বিশ্বচেতনার এই উপলব্ধি আসে জ্ঞান, ভক্তি ও কর্মের পথ ধরে। মানবতাবাদের মূল লক্ষ্যই হল বিশ্বমানুষের মঙ্গলসাধন-যা মানুষকে শান্তির পথ ধরে শাশ্বত আনন্দের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। ধর্ম হিসেবে মানবতাবাদ সাবেকি ধর্মবোধ থেকে তাই অবশ্যই স্বতন্ত্র। ফলত ধর্ম হিসেবে মানবতাবাদ একটি অভিনব ও অনন্য মতবাদরূপেই গণ্য।

Popular posts from this blog

ফরাসি বিপ্লবে দার্শনিকদের অবদান আলোচনা করো।

কার্যকারণ সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে হিউমের মতবাদটি আলোচনা করো।

নেপোলিয়নের পতনের কারণ সম্পর্কে আলোচনা করো।