Book Review: "Rich Dad Poor Dad" by Robert Kiyosaki

Affiliate Disclosure : This post contains affiliate links, which means we earn a commission if you purchase through these links. Thank you for supporting our site! Book Review: "Rich Dad Poor Dad" by Robert Kiyosaki A Financial Game-Changer for Entrepreneurs. Rating: 5/5 stars Introduction In the world of personal finance, few books have made as significant an impact as Rich Dad Poor Dad by Robert Kiyosaki. First published in 1997, this groundbreaking book offers insights into wealth-building that challenge conventional beliefs about money and education. If you're looking to reshape your financial future, this book might just be the catalyst you need. Overview of the Book Rich Dad Poor Dad contrasts the financial philosophies of Kiyosaki's two father figures: his biological father (the "Poor Dad"), who believed in traditional education and job security, and his best friend’s father (the "Rich Dad"), who advocated for financial literacy, investing

মানবতাবাদ কী? মানবতাবাদের মূলনীতি বা উদ্দেশ্য কী?

মানবতাবাদ

যে মতবাদ মানুষের সামগ্রিক মঙ্গলের ধারণাকে সূচিত করে এবং মানবসমাজের সর্বাঙ্গীণ উন্নতি ও কল্যাণের বিষয়টি প্রচার করে, সেই মতবাদকেই বলা হয় মানবতাবাদ (humanism)। চোদ্দো থেকে সতেরো শতকের মধ্যে ইতালিতে প্রথম যে মানবকেন্দ্রিক আদর্শের জন্ম হয়, তা-ই মানবতাবাদ নামে পরিচিত। প্রাচীন গ্রিক ও রোমান সংস্কৃতির প্রভাবে এর প্রসার ঘটলেও ক্রমশ এই আদর্শ নিজস্বতা অর্জন করে। প্রাচীন ভারতবর্ষের আদর্শে ও মধ্যযুগে সুফি ও ভক্তিবাদী দর্শনেও মানবতাবাদের কথা বলা হয়েছে। আধুনিক ভারতের মনীষী রবীন্দ্রনাথের ভাষায় মানবতাবাদ-ই হল মানবধর্ম।

মানবতাবাদের মূলনীতি বা উদ্দেশ্য


মানবতাবাদের মূলনীতি বা উদ্দেশ্যগুলি হল-

[1] আধুনিক ধর্মরূপে মানবতাবাদ: মানবধর্মের আকার হিসেবে মানবতাবাদের বিষয়টি বর্তমানে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে আলোচিত হচ্ছে। কারণ, বর্তমান ধারণা অনুযায়ী ধর্ম বলতে বোঝায় সর্বজনীন বা বিশ্বজনীন ধর্মকে, যা মানুষের সামগ্রিক কল্যাণ সূচিত করে। ধর্ম ক্রমান্বয়ে আদিম উপজাতীয় স্তর থেকে উত্তরণের মাধ্যমে বিশ্বজনীন ধর্মের দিকে অগ্রসর হয়েছে। আদিম অন্ধ কুসংস্কারের জাল ছিন্ন করে, ধর্ম হয়ে উঠেছে বিজ্ঞানমনস্ক ও যুক্তিবাদী। এরূপ যুক্তির আলোকেই ধর্ম তার অন্ধগলি থেকে প্রশস্ত রাজপথে এসে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে মানুষ উপলব্ধি করতে সমর্থ হয়েছে যে, ধর্ম কোনো ব্যক্তিগত বিষয় নয়, গোষ্ঠীগত সম্পত্তিও নয়, অথবা কোনো নির্দিষ্ট জাতির বিষয়রূপেও গণ্য নয়। ধর্ম হল বিশ্বজনীন বা সর্বজনীন, ধর্ম হল সমগ্র মানবসমাজের। 

[2] সামগ্রিক কল্যাণসাধনে মানবতাবাদ: ধর্মের মূলনীতিই হল মানবসমাজের সামগ্রিক মঙ্গল বা কল্যাণসাধন। ধর্মের এরূপ ভাবটিই ব্যক্তিমানুষকে যেমন মানুষ হিসেবে তুলে ধরে, তেমনই তার অন্তঃস্থিত মানবতাকেও প্রকাশ করে। শুধুমাত্র ব্যক্তির নিজের বা গোষ্ঠীর অথবা জাতির মঙ্গলের কথা চিন্তা না করে, যদি সামগ্রিকভাবে মানবসমাজের মঙ্গলের কথা চিন্তা করা হয়, তখন তাকেই বলা হয় মানবতাবাদ। এই মানবতাবাদই হল আধুনিক মানবধর্মের মূলভিত্তি। ধর্মের সামাজিক উত্তরণের মাধ্যমেই মানবতাবাদের ধারণাটি আজ আমাদের সামনে এসেছে।

[3] উৎপত্তিগত ও প্রকৃত অর্থে মানবতাবাদ: মানবতাবাদ-এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হল Humanism এবং এই শব্দটি লাতিন 'Humanitas' শব্দ থেকে উদ্ভূত। 'Humanitas' শব্দটির প্রকৃত অর্থ হল 'জীবনের পরিপূর্ণ বিকাশসাধন'। সুতরাং, মানবতাবাদ-এর পূর্ণ অর্থ হল মানুষের জীবনের পরিপূর্ণ বিকাশ সূচিত করা। এ হল মানুষ হিসেবে মানুষের তথা মানবতার জয়গান, যা সকল মানুষকে একসূত্রে গ্রথিত করে বিশ্বচেতনায় উদ্বুদ্ধ করে। এ হল এমনই পূর্ণতা, যা ব্যক্তিমানুষকে তার সীমানার বাইরে টেনে নিয়ে গিয়ে পরমসত্তার চেতনার দ্বারে হাজির করে। এরূপ চেতনাই হল শান্তির পূর্ণরূপ, মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তির পরিপূর্ণ বিকাশ।

[4] জীবন্মুখী ধর্মমত গঠনে মানবতাবাদ: অধ্যাপক টয়েনবি উল্লেখ করেন যে, ধর্ম মানুষের সামাজিক জীবনের এক শ্রেষ্ঠ উপাদান। ধর্ম ব্যর্থ হলে মানবসভ্যতাও ব্যর্থ হয়। ধর্মকে তাই গোষ্ঠীবদ্ধ না করে, করতে হয় উদার ও মানবমুখী। আধুনিককালে প্রায় প্রত্যেকটি প্রথাগত ধর্মেই একটি বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে এবং তা হল ধর্মকে উদার ও জনকল্যাণমুখী করে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা। মানবতাবাদীদের মূল বক্তব্য হল যে, ধর্মের সংকীর্ণতাপূর্ণ অন্ধগলিতে আবর্তিত হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। ধর্মকে গড়ে তুলতে হবে জীবন্মুখী করে।

[5] ধর্মের দিশারি রূপে মানবতাবাদ: রবীন্দ্রনাথের মতে, ধর্ম হবে মানবতার দিশারী, যেখানে ধ্বনিত হবে, সমস্ত মানুষই এক চরম সত্তার প্রকাশ, সমস্ত মানুষই একই পিতার সন্তান। প্রত্যেকটি মানুষই তাই সমস্ত মানুষের জন্যই। পরলোক নয়, এই মানবিক ধর্ম জোর দেয় প্রকৃতি ও মানবজীবনের মধ্যেই সত্য, মঙ্গল ও সুন্দরের সন্ধানের ওপর। এই মানবতাবাদকেই আজকের মানুষ প্রকৃত ধর্মরূপে স্বীকার করেছে।

[6] সর্বজনীন ধর্মরূপে মানবতাবাদ: আধুনিক বিশ্বের ধর্ম হিসেবে মানবতাবাদের এক বাহ্যিক প্রকাশ লক্ষ করা যায়। বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র আজ মানবতাবাদের গুরুত্বকে বোঝার চেষ্টা করছে। এরই ফলে তারা বিভিন্নরকম জনকল্যাণমূলক চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে নিরস্ত্রীকরণচুক্তির উল্লেখ করা যায়। বিভিন্ন রাষ্ট্রের তাই আগে মানবিক হয়ে মানবতাবাদকেই বিশ্বের একমাত্র ধর্মরূপে প্রতিষ্ঠা করা উচিত। 

[7] বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার মানবতাবাদ: আধুনিককালে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রনায়কের মধ্যে মানবতাবাদের প্রকাশ লক্ষ করা যায়। কারণ, তাঁরা বিশ্বশান্তি ও সংহতি প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে পারস্পরিকভাবে বিভিন্নরকম চুক্তিতে আবদ্ধ হচ্ছেন। সমগ্র বিশ্বকে তাঁরা জনকল্যাণকারীরূপে গড়ে তোলার চেষ্টা করে চলেছেন। মানবতার পরিপন্থী যা কিছু এবং যা কিছু বিশ্বের জনগণের কাছে অকল্যাণকর, তার সমস্ত কিছুকেই তাঁরা পরিহার করে চলেছেন। এরূপ মানসিকতার ওপর ভিত্তি করেই বিশাল শক্তিধর দেশগুলির মধ্যে গড়ে উঠেছে 'নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি'-র মতো গুরুত্বপূর্ণ অনেক চুক্তি। এই চুক্তিগুলির মূল লক্ষ্য হল মানবতাকে রক্ষা করা, মানুষকে মানুষ হিসেবে শ্রদ্ধা করা। বিশ্বের মানুষের কাছে তাই আজ একটাই ধর্ম গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে এবং তা হল মানবধর্ম-যার মূলভিত্তিই হল মানবতাবাদ।


Popular posts from this blog

ফরাসি বিপ্লবে দার্শনিকদের অবদান আলোচনা করো।

কার্যকারণ সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে হিউমের মতবাদটি আলোচনা করো।

নেপোলিয়নের পতনের কারণ সম্পর্কে আলোচনা করো।