Book Review: "Rich Dad Poor Dad" by Robert Kiyosaki

Affiliate Disclosure : This post contains affiliate links, which means we earn a commission if you purchase through these links. Thank you for supporting our site! Book Review: "Rich Dad Poor Dad" by Robert Kiyosaki A Financial Game-Changer for Entrepreneurs. Rating: 5/5 stars Introduction In the world of personal finance, few books have made as significant an impact as Rich Dad Poor Dad by Robert Kiyosaki. First published in 1997, this groundbreaking book offers insights into wealth-building that challenge conventional beliefs about money and education. If you're looking to reshape your financial future, this book might just be the catalyst you need. Overview of the Book Rich Dad Poor Dad contrasts the financial philosophies of Kiyosaki's two father figures: his biological father (the "Poor Dad"), who believed in traditional education and job security, and his best friend’s father (the "Rich Dad"), who advocated for financial literacy, investing

বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ ২ নম্বরি প্রশ্ন মাধ্যমিক

আমার এই ব্লগ পোস্টে আসার জন্য আপনাকে অনেক  ধন্যবাদ 🙏 ৷ দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ ৷ সমস্ত ২ নম্বরি প্রশ্ন ও উত্তর এখানে দেওয়া হলো ৷ যেখানে বহির্জাত প্রক্রিয়া থেকে ১৮ টি প্রশ্ন নদী ধেকে ৫৩ টি  প্রশ্ন এবং হিমবাহ থেকে ৪০ টি প্রশ্ন দেওয়া হলো ২নম্বরি ৷

বহির্জাত প্রক্রিয়া

প্রশ্ন ১ ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া (Geomorphic Process) বলতে কী বোঝ?


উত্তর : যেসকল ভৌত ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভূত্বকের উপরিভাগে নানা ভূমিরূপের সৃষ্টি, বিনাশ, পরিবর্তন ও বিবর্তন হয়ে চলেছে, তাদের একত্রে ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া (Geomorphic Process) বলে।


প্রশ্ন। ২ কোন্ দুটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া কার্যকর হয়?


উত্তর : অন্তর্জাত প্রক্রিয়া (Endogenetic Process) এবং বহির্জাত প্রক্রিয়া (Exogenetic Process)-এর মাধ্যমে ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া কার্যকর হয়।


প্রশ্ন ৷ ৩ বলে? অন্তর্জাত প্রক্রিয়া (Endogenetic Process) কাকে


উত্তর : ভূ-অভ্যন্তরে উত্ত বলের প্রভাবে স্থানীয় বা পা ভাবে কঠিন ভূত্বকের যে ধীর ও আকস্মিক পরিবর্তন ঘটে কেনাক অন্তর্জাত প্রক্রিয়া বলা হয়। 

প্রশ্ন ৪ বহির্জাত ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া (Exogenetic Process) বলতে কী বোঝ?


উত্তর : ভূবহিস্থ বা পৃথিবীপৃষ্ঠের বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির মাধ্যমে যান্ত্রিক ও রাসায়নিক পদ্ধতিতে ভূপৃষ্ঠের বিবর্তন ও পরিবর্তনকেই। বহির্জাত ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া বলে।


প্রশ্ন। ৫ বহির্জাত ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়ার শক্তিগুলি কী কী?


উত্তর : বহির্জাত ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়ার শক্তিগুলি হল নদী বা জলধারা, হিমবাহ, বায়ু, সমুদ্রতরঙ্গ, ভৌমজল ইত্যাদি।


প্রশ্ন ৷ ৬ পর্যায়ন বা পর্যায়ন প্রক্রিয়া (Gradation) কাকে বলে?


উত্তর : ক্ষয়সীমার সাপেক্ষে অসমতল ও বন্ধুর ভূমির সমতলে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে পর্যায়ন বলা হয়। Chamberlin এবং Salisbury নামক দুই ভূবিজ্ঞানী প্রথম 'পর্যায়ন' বা 'Gradation' শব্দটি ব্যবহার করেন।


প্রশ্ন ৷ ৭ কোন্ দুটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পর্যায়ন প্রক্রিয়া কার্যকর হয়?


উত্তর : অবরোহণ এবং আরোহণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পর্যায়ন প্রক্রিয়া কার্যকর হয়। 


প্রশ্ন। ৮ অবরোহণ প্রক্রিয়া (Degradation) কাকে বলে?


উত্তর : যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন বহির্জাত শক্তিসমূহ ভূপৃষ্ঠের কোনো উঁচু জায়গাকে ক্রমাগত ক্ষয়ের ফলে সমতলভূমিতে পরিণত করে, তাকে বলে অবরোহণ প্রক্রিয়া।


প্রশ্ন। ৯ আরোহণ প্রক্রিয়া (Aggradation) কাকে বলে?


উত্তর : বিভিন্ন ধরনের বহির্জাত প্রাকৃতিক শক্তিসমূহের মাধ্যমে সঞ্চয়কার্যের ফলে স্থলভূমির নীচু অংশ বা নিম্নভূমি ভরাট হয়ে উঁচু হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে আরোহণ প্রক্রিয়া বলা হয়।


প্রশ্ন ৷ ১০ অবরোহণ ও আরোহণের মূল পার্থক্য কী?


উত্তর : অবরোহণ ও আরোহণ প্রতিমার মামা পার্থক্য হল- অবরোহণ প্রক্রিয়ায় ক্ষয়ের মাধ্যমে উ। চুদিকাইচতা হ্রাস পায় এবং আরোহণ প্রক্রিয়ায় সঞ্চয়কার্যের মাধ্যমে আমি ভরাট হয়ে ভূমির উচ্চতা বৃদ্ধি করে।


প্রশ্ন। ১১ পর্যায়িত ভূমি (Graded Landro৭৯) কাকে বলে?


উত্তর : ক্ষয় ও সঞ্চয়ের মাধ্যমে কোনো ভূমিরূপের মধ্যে যখন সাম্য অবস্থা বিরাজ করে, তখন সেই ভূমিরূপকে পর্যায়িত ভূমি বলা হয়।


প্রশ্ন। ১২ আবহবিকার (Weathering) কাকে বলে?


উত্তর : আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদান, যেমন-উন্নতা, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত ইত্যাদির দ্বারা ভূপৃষ্ঠের শিলাসমূহের নিজ স্থানে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিচূর্ণন ও রাসায়নিক পদ্ধতিতে বিয়োজন হওয়াকে আবহবিকার বলে।

আবহবিকার যান্ত্রিক, রাসায়নিক ও জৈবিক পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়। 


প্রশ্ন। ১৩ ক্ষয়ীভবন (Erosion) কী?


উত্তর : ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন ক্ষয়কারী শক্তির দ্বারা পদার্থের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে অপসারিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে ক্ষয়ীভবন বলা হয়। এটি একটি গতিশীল প্রক্রিয়া।


প্রশ্ন৷ ১৪ পুঞ্জিত ক্ষয় (Mass wasting) কাকে বলে?


উত্তর : উচ্চভূমির ঢালের মৃত্তিকা ও শিলাস্তর অভিকর্ষের টানে ঢাল বেয়ে নীচে নেমে আসার ঘটনাকে পুঞ্জিত ক্ষয় বলে। 


প্রশ্ন৷ ১৫ নগ্নীভবন (Denudation) কাকে বলে?


উত্তর : আবহবিকার, পুঞ্জিত ক্ষয় এবং ক্ষয়ীভবন-এই তিনটি পদ্ধতির যৌথ ক্রিয়াশীলতায় ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগের শিলাস্তর ক্ষয়ীভূত হয়ে অপসারিত হয়। এর ফলে নীচের শিলাস্তর উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। এই প্রক্রিয়াকেই নগ্নীভবন বলে।


প্রশ্ন৷ ১৬ নগ্নীভবনের সূত্রটি কী?


উত্তর : নগ্নীভবনের সূত্রটি হল-

নগ্নীভবন = আবহবিকার + পুঞ্জিত ক্ষয় + ক্ষয়ীভবন 


প্রশ্ন। ১৭ ক্ষয়সীমা কাকে বলে?


উত্তর : ক্ষয়কারী শক্তিগুলি ভূপৃষ্ঠের নীচে যতটা পর্যন্ত ক্ষয় করতে পারে, তা হল ক্ষয়সীমা। সমুদ্রতল হল শেষ ক্ষয়সীমা। J.W. Powell হলেন ক্ষয়সীমা ধারণার প্রবর্তক।


প্রশ্ন। ১৮ ক্ষয়ীভবন ও পুঞ্জিত ক্ষয়ের মূল পার্থক্য কী?


উত্তর : ভূপৃষ্ঠস্থ বিভিন্ন শক্তির মাধ্যমে পদার্থের অপসারণ হল ক্ষয়ীভবন। অপরদিকে অভিকর্ষজ বলের প্রভাবে ভূমির ঢাল বরাবর পদার্থ নেমে আসা হল পুঞ্জিত ক্ষয়।


নদী


প্রশ্ন ৷ ১ নদী (River) কাকে বলে?

উত্তর : নদী হল এক স্বাভাবিক জলধারা যা উচ্চভূমি থেকে তুষারগলা জল বা বৃষ্টির জলে পুষ্ট হয়ে বা প্রস্রবণ থেকে উৎপন্ন হয়ে ভূমির ঢাল অনুসারে ভূপৃষ্ঠের নির্দিষ্ট খাত দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সাগর, হ্রদ বা অন্য কোনো জলধারায় এসে মিলিত হয়। যেমন-গঙ্গা, সিন্ধু, ব্রহ্মপুত্র ইত্যাদি।


প্রশ্ন ৷ ২ জলচক্র (Hydrological cycle) কাকে বলে?


উত্তর: বাষ্পীভবন, ঘনীভবন, অধঃক্ষেপণ, পৃষ্ঠপ্রবাহ প্রভৃতি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বারিমণ্ডল, বায়ুমণ্ডল ও স্থলভাগের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে জলের বিরামহীন চক্রাকার পরিবর্তন হল জলচক্র।


প্রশ্ন ৷ ৩ জলচক্রের প্রধান প্রক্রিয়াগুলি কী কী?


উত্তর : জলচক্রের প্রধান প্রক্রিয়াগুলি হল-বাষ্পীভবন (Evaporation), ঘনীভবন (Condensation), অধঃক্ষেপণ (Precipitation), পৃষ্ঠপ্রবাহ (Surface runoff), অনুস্রাবণ (Infiltration) ইত্যাদি।


প্রশ্ন ৷ ৪ নদীর জলের উৎসগুলি কী কী? বা, নদীর জল কোথা থেকে আসে?


উত্তর : বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির জল, তুষার, বরফ ও হিমবাহ গলা জল, প্রস্রবণ দিয়ে বেরিয়ে আসা ভৌমজল ইত্যাদি হল নদীর জলের উৎস। 


প্রশ্ন ৷ ৫ উপনদী ও শাখানদী কাকে বলে?


উত্তর : উপনদী (Tributaries) : প্রধান নদীর গতিপথের অনেক স্থানে ছোটো নদী এসে মূলনদীতে মিলিত হয়, এইসব ছোটো ছোটো নদীকে প্রধান নদীর উপনদী বলা হয়। যেমন-যমুনা হল গঙ্গার উপনদী।


* শাখানদী (Distributeries) : কোনো বড়ো নদী থেকে অন্য কোনো নদী বেরিয়ে এসে সাগরে বা অন্য কোনো নদীতে বা সেই নদীতেই এসে পড়লে তাকে শাখানদী বলে। যেমন-গঙ্গার প্রধান শাখানদী হল ভাগীরথী-হুগলি। 


প্রশ্ন ৷ ৬ নদী অববাহিকা (River Basin) কাকে বলে?


উত্তর: যে সুনির্দিষ্ট অঞ্চলের মধ্যে দিয়ে মূলনদী, তার শাখানদী ও উপনদী-সহ প্রবাহিত হয়, তাকে বলা হয় নদী অববাহিকা।


প্রশ্ন। ৭ নদীর ধারণ অববাহিকা (Catchment Basin) বলতে কী বোঝো?


উত্তর : নদী অববাহিকার মধ্যে পার্বত্য বা উচ্চভূমি অংশে নদী যতটুকু অঞ্চল অধিকার করে আছে, তাকে বলা হয় নদীর ধারণ অববাহিকা।


প্রশ্ন। ৮ ধারণ অববাহিকা নদীর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কেন?


উত্তর : নদীর গতিবেগ ও ঢাল, নদীতে উপস্থিত পলির পরিমাণ ও তার গুণাগুণ, জলের পরিমাণ ইত্যাদি অনেকটাই নদীর ধারণ অববাহিকার চরিত্রের ওপর নির্ভরশীল। তাই ধারণ অববাহিকা নদীর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।


প্রশ্ন ৷ ৯ নদী উপত্যকা (River Valley) কাকে বলে?


উত্তর: উৎস থেকে মোহানা পর্যন্ত নদীর উভয় পাশের উচ্চভূমির মধ্যে সংকীর্ণ ও দীর্ঘ ভূমি হল নদী উপত্যকা।


প্রশ্ন ৷ ১০ নদীখাত কী?


উত্তর : নদী উপত্যকার নির্দিষ্ট যে অংশ দিয়ে জল বাহিত হয়, তা হল নদীখাত।


প্রশ্ন ৷ ১১ নদীখাত ও নদী উপত্যকার মধ্যে তফাত কী?


উত্তর : নদীর উৎস থেকে মোহান পর্যন্ত নদীর উভয় পাশের উচ্চভূমির মধ্যে সংকীর্ণ ও দীর্ঘ ভূমি হল নদী উপত্যকা। অপরদিকে নদী উপত্যকার যে নির্দিষ্ট অংশ দিয়ে জল প্রবাহিত হয় তা হল নদীখাত। অতএব নদী উপত্যকার মধ্যেই নদীখাত অবস্থান করে।


প্রশ্ন ৷ ১২ নদীবর্তন (River Regime) কী?


উত্তর : নদীর জলের পরিমাণ সারাবছর সমান থাকে না। ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে কখনও কম বা কখনও বেশি হয়। নদীর জলধারার এই পর্যায়ক্রমিক ও ঋতুভিত্তিক পরিবর্তনকেই নদীবর্তন বলে। 


প্রশ্ন । ১৩ জলবিভাজিকা (Watershed) বলতে কী বোঝ?


উত্তর : যে উচ্চভূমি দুই বা ততোধিক নদীগোষ্ঠী বা নদী অববাহিকাকে পৃথক করে তাকে জলবিভাজিকা বলে। পর্বত, পাহাড়, উচ্চ মালভূমি ইত্যাদি ভূমিরূপ জলবিভাজিকা হিসেবে অবস্থান করে। 


প্রশ্ন ১৪ ভারতের বিখ্যাত দুটি জলবিভাজিকার নাম লেখো।


উত্তর : ভারতের বিখ্যাত দুটি জলবিভাজিকা হল-হিমালয় পার্বত্যভূমি এবং পশ্চিমঘাট পর্বত।


প্রশ্ন । ১৫ নদী কী কী কারণে নিত্যবহ হয়?


উত্তর : নদী অববাহিকায় সারাবছর বৃষ্টি হলে কিংবা নদী বৃষ্টি ও বরফগলা জলে পুষ্ট হলে নিত্যবহ বা চিরপ্রবাহী হয়।


প্রশ্ন । ১৬ দোয়াব (Doab) কাকে বলে?


উত্তর: দুটি নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলকে দোয়াব বলা হয়।


প্রশ্ন । ১৭ নদীসংগম বলতে কী বোঝ?


উত্তর : দুটি নদী যেখানে মিলিত হয়, সেই স্থানকে বলা হয় নদীসংগম। যেমন-গঙ্গা ও যমুনার সংগমস্থল হল এলাহাবাদ।


প্রশ্ন । ১৮ বিনুনী নদী কাকে বলে?


উত্তর : নদীখাতে অসংখ্য চড়া সৃষ্টি হলে নদী অসংখ্য খাতে ভাগ হয়ে এঁকেবেঁকে বিনুনীর ন্যায় প্রবাহিত হয়। একেই বিনুনী নদী বলে। পর্বতের পাদদেশে, মোহানায় বদ্বীপ থাকলে বিনুনী নদী দেখা যায়।


প্রশ্ন ৷ ১৯ নদীর কাজ কী কী?


উত্তর : উৎস থেকে মোহানা পর্যন্ত নদীর কাজ হল ক্ষয়, বহন ও সঞ্চয়। এই তিনটি প্রক্রিয়ায় ভূমিরূপের পরিবর্তন হয়।


প্রশ্ন ৷ ২০ নদী কোন্ কোন্ পদ্ধতিতে ক্ষয়কাজ করে?


উত্তর : নদী প্রধানত চারভাবে ক্ষয় করে। যেমন- (i) জলপ্রবাহ ক্ষয়, (ii) অবঘর্ষ, (iii) ঘর্ষণ ক্ষয় এবং (iv) দ্রবণ ক্ষয়।


প্রশ্ন । ২১ নদী কোন্ কোন্ প্রক্রিয়ায় বহন করে?


উত্তর : নদী প্রধানত চার প্রক্রিয়ায় বহন করে। যেমন- (i) দ্রবণ প্রক্রিয়া, (ii) ভাসমান প্রক্রিয়া, (iii) লম্ফদান প্রক্রিয়া, (iv) আকর্ষণ প্রক্রিয়া।


প্রশ্ন ৷ ২২ ষষ্ঠঘাতের সূত্র (Sixth Power Law) কী?


উত্তর : নদীর গতিবেগের সঙ্গে বহন ক্ষমতার সুনির্দিষ্ট সম্পর্ক আছে। দেখা গেছে নদীর গতিবেগ দ্বিগুণ হলে তার বহন ক্ষমতা বাড়ে ৬৪ গুণ বা ২৩ হারে। এটি হল ষষ্ঠ ঘাতের সূত্র, যার ব্যাখ্যা দেন ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দে W. Hopkins।


প্রশ্ন । ২৩ কিউসেক ও কিউমেক কী?


উত্তর: কিউসেক (Cusec): কোনো নদীতে একটি নির্দিষ্ট স্থান দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যত ঘনফুট (Cubic feet per second) জল প্রবাহিত হয়, তা হল কিউসেক।

* কিউমেক (Cumec): নদীর একটি নির্দিষ্ট স্থান দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যত ঘনমিটার (Cubic meter per second) জল প্রবাহিত হয়, তাকে বলে কিউমেক।


প্রশ্ন । ২৪ নদীর গতি ক-টি ও কী কী?


উত্তর: নদীর তিনটি গতি; যথা-উচ্চগতি, মধ্যগতি ও নিম্নগতি।


প্রশ্ন ৷ ২৫ আদর্শ নদী (Ideal river) বলতে কী বোঝ ও উদাহরণ দাও।


উত্তর : উৎস থেকে মোহানা পর্যন্ত অংশে যে নদীর তিনটি গতি- প্রবাহই (উচ্চগতি, মধ্যগতি, নিম্নগতি) সুস্পষ্ট থাকে, তাকে বলে আদর্শ নদী। যেমন-গঙ্গা হল একটি আদর্শ নদী।


প্রশ্ন ৷ ২৬ গঙ্গা নদীর উচ্চগতি, মধ্যগতি ও নিম্নগতির সীমানা নির্ধারণ করো।


উত্তর : গঙ্গার উচ্চগতি হল গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ গুহা থেকে হরিদ্বার পর্যন্ত ২৩০ কিমি, মধ্যগতি হল হরিদ্বার থেকে ধূলিয়ান পর্যন্ত এবং ধূলিয়ান থেকে বঙ্গোপসাগরের মোহানা পর্যন্ত হল গঙ্গার বদ্বীপ প্রবাহ।


প্রশ্ন ২৭ উচ্চগতিতে পার্শ্বক্ষয় অপেক্ষা নিম্নক্ষয় অধিক কেন?


উত্তর : উচ্চগতি বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর ঢাল অনেক বেশি


থাকে। ফলে নদী প্রবল বেগে প্রবাহিত হয়। এই অংশে অবস্থিত ছোটো-বড়ো প্রস্তরখণ্ড নদীর সাথে বাহিত হওয়ার সময় অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় নীচের দিকে ক্ষয় করে, ফলে উচ্চগতিতে নদীর পার্শ্বক্ষয় অপেক্ষা নিম্নক্ষয় অনেক বেশি হয়।


প্রশ্ন ২৮ গিরিখাত (Gorge) কাকে বলে?


উত্তর : বৃষ্টিবহুল অতি উচ্চ পার্বত্য


অঞ্চলে নদীর নিম্নক্ষয়ের মাত্রা অত্যন্ত বেশি হওয়ায় নদী উপত্যকা সংকীর্ণ ও অতি গভীর হয়। এই ধরনের অতি গভীর ও সংকীর্ণ নদী উপত্যকাকেই গিরিখাত বলে।


প্রশ্ন । ২৯ গিরিখাত অত্যন্ত সুগভীর হয় কেন?


উত্তর : উচ্চপর্বতের খাড়া ঢাল বেয়ে নদী যখন তীব্র গতিতে নীচে নেমে আসে তখন তার গতিবেগ অনেক বেশি থাকে। নদীর তীব্র জলস্রোত ও জলস্রোতের সাথে বাহিত প্রস্তরখণ্ডের আঘাতে নদীর নিম্নক্ষয় বেশি হয়। এই কারণে গিরিখাত অত্যন্ত সুগভীর হয়। নবীন ভঙ্গিল পর্বত উচ্চ বলেই এখানে গিরিখাত সৃষ্টি হয়।


প্রশ্ন । ৩০ ক্যানিয়ন (Canyon) কাকে বলে?


উত্তর: শুষ্ক অঞ্চলে নদী উচ্চগতিতে শুধুমাত্র নিম্নক্ষয়ের মাধ্যমে আকৃতির গিরিখাত সৃষ্টি করলে, তাকে ক্যানিয়ন বলে। 


প্রশ্ন ৩১ ক্যানিয়ন অত্যন্ত গভীর হয় কেন?


[উত্তর:


ক্যানিয়ন প্রধানত উচ্চ শুষ্ক অঞ্চলে দেখা যায়। এখানে


প্রবাহিত চিরপ্রবাহী নদী নিম্নক্ষয়ের মাধ্যমে গভীরতা বাড়ায় কিন্তু বৃষ্টির অভাবে পার্শ্বক্ষয় তেমন হয় না বলে উপত্যকাটি অত্যন্ত গভীর ও সংকীর্ণ হয়।


প্রশ্ন ৩২ নবীন ভঙ্গিল পর্বতে অসংখ্য গিরিখাত গড়ে ওঠে কেন?


উত্তর : নবীন ভঙ্গিল পর্বতগুলি সুউচ্চ ও নরম শিলা দ্বারা গঠিত অঞ্চল। ফলে এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলির ক্ষয়ের মাত্রা (নিম্নক্ষয়) অত্যন্ত বেশি হয় বলেই উপত্যকা হয়েছে অতি গভীর ও সংকীর্ণ। 


প্রশ্ন ৩৩ পৃথিবী বিখ্যাত ক্যানিয়নটির নাম কী? এবং তা কোন্ নদীতে গড়ে উঠেছে?


উত্তর : পৃথিবীর বিখ্যাত ক্যানিয়নটির নাম হল গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন এবং এটি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো নদীতে অবস্থিত।


প্রশ্ন ৩৪ র‍্যাপিডস্ বা খরস্রোত কী?


উত্তর : নদীগর্ভে পর্যায়ক্রমে কঠিন ও নরম শিলা অবস্থান করলে, কঠিন শিলা অপেক্ষা নরম শিলা বেশি ক্ষয় হয় এবং বন্ধুরতা বাড়ে। ফলে নদীর জল ধাপে ধাপে নেমে আসে। একে র‍্যাপিডস্ বা খরস্রোত বলে। হিমালয়ের অলকানন্দা, ভাগীরথী ইত্যাদি নদীতে। র‍্যাপিডস্ দেখা যায়।


প্রশ্ন ৩৫ প্রপাতকূপ বা প্লাঞ্জপুল কাকে বলে?


উত্তর : জলপ্রপাতের জল প্রবলবেগে যেখানে পড়ে সেখানে বিশালাকার হাঁড়ির মতো গর্তের সৃষ্টি হয়। একে প্লাঞ্জপুল বলে।


প্রশ্ন ৩৬ মন্ত্রকূপ (Pot hole) কী?


উত্তর : নদীর উচ্চগতিতে জলস্রোতে বাহিত প্রস্তরখণ্ড অবঘর্ষ পদ্ধতিতে নদীগর্ভ ক্ষয় করে হাঁড়ির মতো বড়ো বড়ো গর্ত সৃষ্টি করে। এই গর্তগুলিকে মন্থকূপ বা (Pot hole) বলে। ম্যকূপ সৃষ্টির মাধ্যমে নদীর গভীরতা বাড়তে থাকে।


প্রশ্ন ৩৭ শৃঙ্খলিত শৈলশিরা (Interlocking spur) কী?


উত্তর : পার্বত্য অঞ্চলে নদীপথের বাধাস্বরূপ শৈলশিরা বা পাহাড় থাকলে তা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য নদী এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হয়। তখন শৈলশিরাগুলিকে দূর থেকে দেখে মনে হয় উপত্যকায় আবদ্ধ হয়ে আছে। এটি হল আবদ্ধ বা শৃঙ্খলিত শৈলশিরা।


প্রশ্ন ৩৮ মিয়েন্ডার (Meander) বা নদীবাঁক কাকে বলে? 


উত্তর : সমভূমি অঞ্চলে নদীর প্রবাহপথে চড়া সৃষ্টি হলে সেই বাধা এড়ানোর জন্য নদী আঁকাবাঁকা পথে প্রবাহিত হয়, নদীর এই আঁকাবাঁকা প্রবাহকে মিয়েন্ডার বা নদীবাঁক বলে।


প্রশ্ন ৩৯ মিয়েন্ডার ভূমিরূপের নামকরণের কারণ কী?


উত্তর : তুরস্কের 'মিয়েন্ডারেস' নামক এক নদীর গতিপথে পার্শ্বক্ষয় ও সঞ্চয়ের মাধ্যমে সৃষ্ট মিয়েন্ডার দেখতে পাওয়া যায়। তাই এই নদীর নামানুসারে এই ভূমির নামকরণ হয় 'মিয়েন্ডার'।


প্রশ্ন ৪০ নদীর মধ্য ও নিম্ন গতিতে মিয়েন্ডার সৃষ্টি হয় কেন?


উত্তর : নদীপথের ঢালের পার্থক্যের জন্য জলস্রোতের তীব্রতা বাড়ে কমে। মধ্য ও নিম্ন প্রবাহে ভূমিঢাল অনেক কম থাকে, ফলে নদী ক্ষয়কাজ তেমন করতে পারে না। তবে ক্ষয়প্রাপ্ত পদার্থ বা বোঝা বয়ে নিয়ে চলে। গতিপথে বাধাস্বরূপ কঠিন শিলাস্তূপ পেলে নদী তাকে 

অতিক্রম করতে না পেরে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। এইভাবেই নদীর মধ্য ও নিম্ন গতিতে মিয়েন্ডার সৃষ্টি হয়। 

প্রশ্ন ৪১ নদীচর ও নদীদ্বীপ-এর পার্থক্য কী?


উত্তর : নদীগর্ভে পলি সঞ্চিত হয়ে সৃষ্ট ভূমিরূপ হল নদীচর এবং সেই চর অংশে আরও পলি সঞ্চিত হয়ে তা জলের ওপর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকলে তাকে বলে নদীদ্বীপ।


প্রশ্ন ৪২ বদ্বীপ (Delta) কী?


উত্তর : প্রবাহের শেষপ্রান্তে মোহানায় নদী যেখানে সাগর বা হ্রদে মেশে সেখানে নদীবাহিত কাদা, পলি, বালি স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয়ে মাত্রাহীন 'ব' বা গ্রিক অক্ষর ডেলটা (△)-র মতো যে ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়, তা হল বদ্বীপ।


প্রশ্ন ৪৩ ডেল্টা (△) নামকরণের কারণ কী?


উত্তর: গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস নীলনদের মোহানায় তিন কোণাকৃতি নদীর সঞ্চয়জাত ভূমিকে গ্রিক অক্ষর ডেল্টার 'এ' সাথে তুলনা করে একে ডেল্টা (△) নাম দেন। বাংলায় একেই বদ্বীপ বলে।


প্রশ্ন ৪৪ গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদে অসংখ্য নদীদ্বীপ ও চর সৃষ্টি হয়েছে কেন?


উত্তর : গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদের মধ্য ও নিম্নগতি সম্পূর্ণই সমভূমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত। তাই এখানে নদীর মন্থর গতির কারণে নদীর দ্বারা বয়ে আনা পলি বালির বহন করে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা কম থাকা। সেই পলি বালি নদীগর্ভে জমে অসংখ্য নদীদ্বীপ ও নদীচর সৃষ্টি করে। তা ছাড়া উক্ত নদীদুটিতে বাহিত পলির পরিমাণও খুব বেশি। 


প্রশ্ন ৪৫ প্লাবনভূমির মধ্যে কোন্ কোন্ ভূমিরূপ গড়ে ওঠে?


উত্তর : প্লাবনভূমির মধ্যে স্বাভাবিক বাঁধ (লিভি), ঢালু স্তূপ, অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ, ঝিল, বিল (জলাভূমি) ইত্যাদি গড়ে ওঠে।


প্রশ্ন ৪৬ স্বাভাবিক বাঁধ বা লিভি কী?


উত্তর : নদীর দু-কূল ছাপিয়ে প্লাবন হলে সবচেয়ে বেশি পলি নদীর দুই তীরে জমা হয়। ফলে, যে একটু বেশি উঁচু নদীপাড় তৈরি হয়, তাকে স্বাভাবিক বাঁধ বলে।


প্রশ্ন ৪৭ খাঁড়ি (Estuary) কাকে বলে?


উত্তর : নদী মোহানার শেষপ্রান্তে নদী যেখানে সাগর বা হ্রদে মেশে সেখানে ফানেল আকৃতির নদীমোহানাকে খাঁড়ি বলে। টেমস, লা প্লাটা নদীর খাঁড়ি অত্যন্ত চওড়া।


প্রশ্ন ৪৮ সুন্দরবন অঞ্চলের নদীগুলিতে খাঁড়ি দেখা যায় কেন?


উত্তর : সুন্দরবন অঞ্চলের নদীগুলির প্রধান বৈশিষ্ট্য হল তীব্র জোয়ারভাটা। এই অঞ্চলের নদী মোহানার বিপরীত দিক থেকে আসা প্রবল জোয়ারে নরম পলিমাটি গঠিত পাড় ভেঙে গিয়ে ফানেলাকৃতি বিশিষ্ট খাঁড়ি সৃষ্টি করে। তাই সুন্দরবন অঞ্চলের নদীগুলিতে খাঁড়ি দেখা যায়।


প্রশ্ন ৪৯ ভারতের বৃহত্তম নদীদ্বীপের নাম ও অবস্থান লেখো।


উত্তর: ভারতের বৃহত্তম নদীদ্বীপের নাম হল মাজুলি এবং এটি


অসমে ব্রহ্মপুত্র নদে অবস্থিত।


প্রশ্ন ৫০ সমপ্রায়ভূমি কী?


উত্তর : বৃষ্টিবহুল আর্দ্র অঞ্চলে নদীর জলপ্রবাহ, বৃষ্টির জল ও অন্যান্য প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে প্রাচীন মালভূমি এবং উচ্চভূমি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষয় পেতে পেতে এক সময় উঁচুনীচু ঢেউ খেলানো ভূমি বা প্রায় সমতলভূমিতে পরিণত হলে তাদের সমপ্রায়ভূমি বলা হয়। 


প্রশ্ন ৫১ উদাহরণসহ প্রধান দু-রকম বদ্বীপের নাম লেখো।


উত্তর : প্রধান দু-ধরনের বদ্বীপ হল-(ⅰ) ধনুকাকৃতি বদ্বীপ : উদাহরণ-গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপ ও (ii) পাখির পায়ের মতো বদ্বীপ : উদাহরণ-মিসিসিপি-মিসৌরী বদ্বীপ।


প্রশ্ন ৫২ সুন্দরবনের দুটি গুরুত্ব লেখো।


উত্তর : (i) এটি পৃথিবীর অন্যতম বায়োস্ফিয়ার পার্ক, যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করছে। (ii) এই বনভূমি সামুদ্রিক ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস আটকায় বলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের কৃষিজমি লবণতার হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে।


প্রশ্ন ৫৩ সুন্দরবন অঞ্চলের দুটি দ্বীপের নাম লেখো যেগুলি ক্রমশ বিলীন হচ্ছে।


উত্তর: সুন্দরবন অঞ্চলের লোহাচড়া ও ঘোড়ামারা দ্বীপ ক্রমশ বিলীন হচ্ছে। 

হিমবাহ 

 প্রশ্ন। ১ হিমবাহ (Glacier) কী?


উত্তর : চিরতুষারাবৃত অঞ্চলে ক্রমাগত হারে সঞ্চিত তুষার প্রবল চাপে সুবিশাল কঠিন বরফস্তূপে পরিণত হয়। এই বরফস্তূপ অভিকর্ষের টানে ঢাল বরাবর নেমে আসে। একেই বলে হিমবাহ। 


প্রশ্ন। ২ নেভে ও ফার্ন বলতে কী বোঝ?


উত্তর : হিমরেখার ঊর্ধ্বে প্রচণ্ড শৈত্যের কারণে তুষারপাত ঘটে। সদ্য পতিত তুষার হাল্কা পেঁজা তুলোর মতো হয়। একে নেভে বলে।  নেভের ওপর পুনরায় তুষারপাতে নীচের তুষারের দৃঢ়তা ও ঘনত্ব বাড়ে। এটি হল ফার্ন।


প্রশ্ন। ৩ রেগেলেশন বা পুনর্জমাটন কাকে বলে?


উত্তর : প্রবল চাপে নীচে হিমবাহ ও ভূমির সীমানা বরাবর


গলনাঙ্ক নেমে গিয়ে বরফ জলে পরিণত হয়। পরে চাপ হ্রাস পেলে


ওই জল আবার বরফে পরিণত হয়। এই পদ্ধতি হল রেগেলেশন


(Regelation) বা পুনর্জমাটন।


প্রশ্ন : হিমযুগ (Ice Age) কাকে বলে?


উত্তর : প্রাচীনকালের কিছু কিছু সময় ভূপৃষ্ঠের বিস্তীর্ণ অংশ পুরু বরফে ঢাকা ছিল। এই যুগকে বলে হিমযুগ। আজ থেকে প্রায় ৩০ লক্ষ বছর আগে প্লাইস্টোসিন যুগে পৃথিবীর ১/৩ ভাগ অংশ হিমবাহ দ্বারা ঢাকা ছিল।


প্রশ্ন ৫ অন্তর্বর্তী হিমযুগ বলতে কী বোঝ?


উত্তর : হিমযুগ-এর সময়কাল একটানা ছিল না, মাঝে মাঝে উয়তা বেড়ে হিমবাহ ঢাকা অঞ্চল সংকুচিত হয়েছিল। এই সময়টিকে বলা হয় অন্তর্বর্তী হিমযুগ।


প্রশ্ন ৬ হিমবাহের গুরুত্ব লেখো।


উত্তর : হিমবাহের গুরুত্ব-


(i) এটি মিষ্টি জলের আধার,


(ii) বিভিন্ন নদীর উৎসস্থল, এবং


(iii) এটি দৃষ্টিনন্দন উপত্যকা যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে।


প্রশ্ন। ৭ নুনাটক্স কী


উত্তর : উচ্চ অক্ষাংশের মহাদেশীয় হিমবাহ অধ্যুষিত অঞ্চলে বরফমুক্ত পর্বতের শিখরদেশগুলিকে নুনাটক্স বলে।


প্রশ্ন ৮ পাদদেশীয় হিমবাহ কাকে বলে ও উদাহরণ দাও।


[উত্তর : হিমবাহ যখন উঁচু পার্বত্য অঞ্চল ছেড়ে উপত্যকায় পাদদেশে মেশে তাকে পাদদেশীয় হিমবাহ বলে।


উদাহরণ: কুমেরু মহাদেশ, যুক্তরাষ্ট্রে আলাস্কা প্রদেশে, গ্রিনল্যান্ডে এই জাতীয় পাদদেশীয় হিমবাহ দেখা যায়।


এ মহাদেশীয় হিমবাহ (Continental Glacier) কী?


উত্তর : মহাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে অবস্থান করা সুবিশাল বরফের আচ্ছাদনকে বলে মহাদেশীয় হিমবাহ। যেমন-অ্যান্টার্কটিকা, গ্রিনল্যান্ড ও আইসল্যান্ডে এই মহাদেশীয় হিমবাহ দেখা যায়।


প্রশ্ন ১০ পার্বত্য বা উপত্যকা হিমবাহ (Valley Glacier) কী?


উত্তর : যে হিমবাহ পার্বত্য উপত্যকার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়, তাকে বলে পার্বত্য বা উপত্যকা হিমবাহ। যেমন-হিমালয়, রকি, আন্দিজ, আল্পস প্রভৃতি সুউচ্চ নবীন ভঙ্গিল পার্বত্য অঞ্চলে পার্বত্য হিমবাহ দেখা যায়।


প্রশ্ন ১১ হিমরেখা (Snowline) কী?


উত্তর : মেরুপ্রদেশ ও উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলের তীব্র শৈত্যে, যে সীমারেখার ওপরে অত্যধিক শীতলতার জন্য সারাবছরই জল জমে বরফে পরিণত হয়ে থাকে এবং যে সীমারেখার নীচে উত্তাপে তুষার গলে যায়, সেই সীমারেখাকে হিমরেখা বলে। 


প্রশ্ন ১২ হিমরেখার সাথে নদীর সম্পর্ক কী?


উত্তর : হিমরেখার নীচে উয়তা বাড়ার সাথে সাথে হিমবাহ গলতে শুরু করে। তাই এটা বলা যায় যে, হিমরেখা প্রধানত হিমবাহ গলে নদী সৃষ্টির পর্যায়কে সূচিত করে।


প্রশ্ন ১৩ হিমশৈল (Ice berg) কাকে বলে? 


উত্তর: সমুদ্র বা হ্রদে ভাসমান বরফের স্তূপকে বলে হিমশৈল। মহাদেশীয় হিমবাহ সমুদ্রের ধারে এসে পড়লে সমুদ্রের তরঙ্গের আঘাতে ভেঙে গিয়ে বা মহাদেশীয় হিমবাহের অংশ সমুদ্রে ভাসতে থাকলে হিমবাহের 

কিছু অংশ ভেঙে গিয়ে ক্রমশ ভেসে দূরে সরে যায় এবং হিমশৈলের উৎপত্তি ঘটে।


হিমশৈল


প্রশ্ন। ১৪ | বার্গমুন্ড (Bergshrund) কাকে বলে? 


উত্তর : উঁচু পর্বত থেকে উপত্যকার (সার্ক বা করি) মধ্যে দিয়ে হিমবাহ নামার সময় আগের থেকে জমে থাকা বরফস্তূপ এবং নামতে থাকা হিমবাহের মধ্যে যে ফাঁক বা গ্যাপের সৃষ্টি হয়, তাকে বলে বার্গসুন্ড। এই ফাঁক হিমবাহের পৃষ্ঠদেশ থেকে তলদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে।


প্রশ্ন। ১৫ ক্রেভাস (Crevasse) বলতে কী বোঝ?


উত্তর : হিমবাহের উপরের পৃষ্ঠে ফাটল ধরলে তাকে ক্রেভাস বলে। হিমবাহ যদি আগাগোড়া সমান ঢালবিশিষ্ট অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, তবে ক্রেভাসের সৃষ্টি হয় না। কিন্তু যখনই হিমবাহ উপত্যকার ঢাল বেড়ে যায়, হিমবাহের বিভিন্ন অংশের মধ্যে গতির পার্থক্য ঘটায়, হিমবাহের পৃষ্ঠে টান পড়ে ক্রেভাস-এর সৃষ্টি হয়।


প্রশ্ন ১৬ র‍্যান্ডক্লাফট্ (Randkluft) কী?


উত্তর : করি অংশের পিছনে মস্তক দেয়াল ও হিমবাহের যে ফাঁক তা হল র‍্যান্ডক্লাফট্। হিমবাহের দেয়াল অংশ তুলনামূলক উন্ন বলে হিমবাহ গলে এই ফাঁক সৃষ্টি হয়।


প্রশ্ন ১৭ করি বা সার্ক (Corrie) কাকে বলে?


[উত্তর : সার্ক হল হিমবাহের অবঘর্ষ ও উৎপাটনজনিত ক্ষয়কাজের ফলে সৃষ্টি হওয়া হাতল ছাড়া ডেকচেয়ারের মতো মাঝখানে গর্তবিশিষ্ট ভূমিরূপ।


এইরকম আকৃতিবিশিষ্ট উপত্যকাকে ফরাসি ভাষায় 'সার্ক' এবং ইংরেজিতে কর্মর' বলে।


প্রশ্ন। ১৮৮ করির ক-টি অংশ থাকে ও কী কী?


উত্তর করির তিনটি অংশ থাকে। যেমন-


(ⅰ) পিছনের দিকে খাড়া দেয়াল,


(ii) মধ্যভাগে নীচু সরা বা চামচের মতো গর্ত, এবং


(iii) প্রান্তভাগে ঢিবির মতো উঁচু অংশ।


প্রশ্ন ১৯ পিরামিড চূড়া (Pyramidal peak) বা হর্ন কাকে বলে?


উত্তর: একটি পাহাড়ের বিভিন্ন দিকে তিন-চারটি সার্ক পাশাপাশি সৃষ্টি হলে, এদের মধ্যবর্তী খাড়া পর্বতচূড়াটিকে পিরামিডের মতো দেখায়। পিরামিডের মতো আকৃতিবিশিষ্ট এই ধরনের পর্বতচূড়াকে পিরামিড চূড়া বলে।


প্রশ্ন ২০ পিরামিড চূড়া হর্ন নামেও পরিচিত কেন?


উত্তর : সুইটজারল্যান্ডের আল্পস পর্বতের ম্যাটারহর্ন হল এক ধরনের পিরামিড চূড়ার উদাহরণ। তাই এর নামানুসারে ভূমিরূপের নামকরণ হয় হর্ন। 


প্রশ্ন ২১ হিমসিঁড়ি বা হিমসোপান কাকে বলে?


উত্তর : অসম ক্ষয়কার্যের কারণে উপত্যকা বরাবর সিঁড়ি বা ধাপ সৃষ্টি হয়। এই ভূমিরূপ হল হিমসিঁড়ি বা হিমসোপান।


প্রশ্ন।২২ রসে মতানে (Rockes Mountonnes) কাকে বলে?


উত্তর: হিমবাহ প্রবাহপথে কোনো উঁচু ঢিবি বা টিলা থাকলে টিলার হিমবাহ প্রবাহের দিকের অংশ (প্রতিবাত অংশ) অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় মসৃণ হয় এবং বিপরীত অংশে (অনুবাত অংশ) উৎপাটন প্রক্রিয়ায় অসমতল, এবড়োখেবড়ো ও ফাটলযুক্ত হয়। এরূপ ভূমিরূপ হল রসে মতানে।


প্রশ্ন। ২৩ ক্র্যাগ ও টেল কী?


উত্তর : হিমবাহের গতিপথে কঠিন শিলাস্তরের পিছনে নরম শিলাস্তর থাকলে, অনেক সময় কঠিন শিলাস্তরটি পিছনে নরম শিলাকে রক্ষণ করে। সামনের কঠিন শিলাকে বলে ব্র্যাগ, পিছনের ঢালযুক্ত কোমল শিলাস্তরকে বলে টেল।


প্রশ্ন। ২৪ ফিয়র্ড (Fjord) কী?


উত্তর: সমুদ্র উপকূলসংলগ্ন পার্বত্যভূমি হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে আংশিক জলমগ্ন হয়ে যে হিম উপত্যকা গঠন করে, তাকে বলে ফিয়র্ড। 


প্রশ্ন। ২৫ ফিয়র্ড ও ফিয়ার্ডের তফাত কী?


উত্তর : উপকূলবর্তী অঞ্চলে হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে উপত্যকা সমুদ্রপৃষ্ঠ অপেক্ষা গভীর হয়। এই অংশ জলমগ্ন হলে একে ফিয়র্ড বলে। নরওয়ে, সুইডেন, গ্রিনল্যান্ড উপকূলে ফিয়র্ড দেখা যায়।

ফিয়র্ড অংশ অপেক্ষাকৃত ছোটো ও কম গভীর হলে তাকে ফিয়ার্ড বলে। নীচু উপকূলে ফিয়ার্ড গঠিত হয়।


প্রশ্ন ২৬ ফিয়র্ড উপকূল গভীর হয় কেন?


উত্তর: সমুদ্র উপকূলে পার্বত্য হিমবাহ তার উপত্যকাকে এমন গভীরভাবে ক্ষয় করে যে হিমবাহ উপত্যকা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকেও নীচে হয়ে যায়। এই কারণে ফিয়র্ড উপকূল গভীর হয়।


প্রশ্ন ২৭ গ্রাবরেখা (Moraine) কাকে বলে?


উত্তর: হিমবাহের ক্ষয়জাত দ্রব্যগুলি (শিলাখণ্ড, বালি, কর্দম) হিমবাহের সাথে বাহিত হয়ে উপত্যকার বিভিন্ন অংশে সঞ্চিত হয়। এরূপ সঞ্চয়কার্যকে গ্রাবরেখা বলে।


প্রশ্ন ২৮ ড্রামলিন (Drumlin) কী?


উত্তর : বিভিন্ন আকৃতির শিলাখণ্ড এবং নুড়ি, বালি, পলি ইত্যাদি হিমবাহ বাহিত পদার্থ কোনো স্থানে সঞ্চিত হয়ে উলটানো নৌকা বা উলটানো চামচের মতো ভূমিরূপ সৃষ্টি করে। একে ড্রামলিন বলে।


প্রশ্ন"২৯Basket of egg topography" বলতে কী বোঝ?


উত্তর : একসঙ্গে অসংখ্য ড্রামলিন একটি স্থানে গড়ে উঠলে তাকে ডিম ভরতি ঝুড়ির মতো দেখায়। এই কারণে একে Basket of egg topography বলা হয়।


প্রশ্ন ৩০ বহিঃবিধৌত সমভূমি (Outwash plain) কাকে বলে?


উত্তর : প্রান্তদেশে হিমবাহ গলতে শুরু করলে গলিত জল হিমবাহ বাহিত নুড়ি, বালি, পলি বিস্তীর্ণ অঞ্চলে চাদরের ন্যায় সঞ্চিত হয়। এর ফলে পর্বতের পাদদেশে যে সমভূমি গড়ে ওঠে তা হল বহিঃবিধৌত সমভূমি।


প্রশ্নী ৩১ কেটল (Kettle) ও কেটল হ্রদ কী?


উত্তর : বহিঃবিধৌত সমভূমিতে বড়ো বড়ো বরফখণ্ড জমে থাকে। পরে ওই বরফ গলে যে গর্ত বা অবনমিত অংশ সৃষ্টি হয়, তাকে বলে কেটল।

কেটলের বরফ গলে গহ্বরগুলি জলপূর্ণ হলে যে হ্রদ সৃষ্টি হয়, একে বলে কেটল হ্রদ। 


প্রশ্ন ৩২ এস্কার (Esker) কাকে বলে?


উত্তর : পর্বত পাদদেশের


নিম্নভূমিতে হিমবাহিত নুড়ি, বালি জমে যে দীর্ঘ, নাতিউচ্চ সংকীর্ণ বাঁধের মতো আঁকাবাঁকা শৈলশিরা গঠিত হয়, তাকে বলে এস্কার।


প্রশ্ন ৩৩ কেম ও কেম সোপান কী?


উত্তর : হিমবাহ অধ্যুষিত পর্বতের পাদদেশের হ্রদে কাঁকর, বালি, পলি সঞ্চিত হয়ে গঠিত বদ্বীপের মতো ত্রিকোণাকার ভূমি হল কেম। কেম ধাপে ধাপে গঠিত হলে তাকে কেম সোপান বলে। 


প্রশ্ন ৩৪ আগামুক কী?


উত্তর : হিমবাহের কার্যের ফলে পর্বতের পাদদেশে বড়ো বড়ো প্রস্তরখণ্ড সঞ্চিত হয়ে যে ভূমিরূপ গঠিত হয়, তাকে বলে আগামুক।


প্রশ্ন ৩৫ ভার্ব কাকে বলে?


উত্তর: কেটল হ্রদের তলদেশে স্তরে স্তরে সঞ্চিত পলিকে ভাব বলে।


প্রশ্ন ৩৬ কোন্ দেশকে 'The land of fjords' বলা হয় ও কেন?


উত্তর : নরওয়েকে বলা হয় "The land of fjord"। কারণ নরওয়েতে অসংখ্য জলমগ্ন ফিয়র্ড দেখা যায়।


প্রশ্ন ৩৭ 'হিমবাহ হল নদীর উৎসস্থল' কারণ কী?


উত্তর : হিমরেখার নীচে, অধিক উয়তার জন্য হিমবাহ গলতে থাকে। সেই হিমবাহগলা জল নিজ পথ বের করে নিয়ে উপর থেকে নীচের দিকে নেমে আসতে থাকে। এইসকল জলধারাই নদী নামে পরিচিত হয়। তাই বলা হয় যে, হিমবাহ হল নদীর উৎসস্থল।


প্রশ্ন ৩৮ হিমানী সম্প্রপাত (Avalanche) বলতে কী বোঝ?


উত্তর: পর্বতের ওপরে অবস্থিত হিমবাহ থেকে যখন বরফের স্তূপ ভেঙে প্রবলবেগে নীচে পড়ে, তখন তাকে বলে হিমানী সম্প্রপাত।


প্রশ্ন ৩৯ বরফ আস্তরণ (Ice Sheet) কাকে বলে?


উত্তর : মহাদেশীয় হিমবাহের অপর নাম হল বরফ আস্তরণ। মহাদেশীয় হিমবাহ যেহেতু দুই মেরু অঞ্চল, বিশেষত গ্রিনল্যান্ড ও অ্যান্টার্কটিকাকে আবৃত করে থাকে, এইজন্য একেই বরফের আস্তরণ বলা হয়।


প্রশ্ন ৪০ ভারতের দুটি হিমবাহের নাম লেখো।


উত্তর : ভারতের দুটি হিমবাহ হল কারাকোরাম পর্বতের সিয়াচেন এবং কুমায়ুন হিমালয়ের গঙ্গোত্রী। 


বায়ু


প্রশ্ন৷ ১ পৃথিবীর কোন্ অঞ্চলে বায়ু ভূমিরূপ পরিবর্তনে অংশগ্রহণ করে?


উত্তর: বায়ু (ⅰ) মরুভূমি (ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় উভয় ধরনের মরুভূমিতে), (ii) মরুভূমিসংলগ্ন মরুপ্রায় ও (iii) উপকূল অঞ্চলে তার কার্যের মাধ্যমে ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটায়।


প্রশ্ন। ২ মরুভূমি (Desert) কাকে বলে?


উত্তর : ভূপৃষ্ঠের যেসব স্থানে দীর্ঘকাল ধরে গড় বৃষ্টি ২৫ সেমির কম, গাছপালা প্রায় নেই এবং অঞ্চলটি মানুষ বসবাসের অনুপযোগী, সেই স্থানকে মরুভূমি বলে।

যেমন-সাহারা, থর, গোবি ইত্যাদি হল পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য মরুভূমি।


প্রশ্ন । ৩ উত্তর গোলার্ধের দুটি ক্রান্তীয় মরুভূমির নাম লেখো।


উত্তর : উত্তর গোলার্ধের দুটি ক্রান্তীয় মরুভূমির নাম হল- (i) আফ্রিকার সাহারা এবং (ii) উত্তর আমেরিকার সোনেরান মরুভূমি।


প্রশ্ন ৪ দক্ষিণ গোলার্ধের দুটি ক্রান্তীয় মরুভূমির নাম লেখো।


উত্তর : দক্ষিণ গোলার্ধের দুটি ক্রান্তীয় মরুভূমির নাম হল-

(i) চিলির আটাকামা মরুভূমি ও (ii) অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট অস্ট্রেলিয়া মরুভূমি। 


প্রশ্ন। ৫ দুটি নাতিশীতোয় মরুভূমির নাম লেখো।


উত্তর : দুটি নাতিশীতোয় মরুভূমির নাম হল-(i) চিনের তাকলামাকান এবং (ii) মঙ্গোলিয়ার গোবি মরুভূমি।


প্রশ্ন ৬ মরুদ্যান (Oasis) কাকে বলে?


উত্তর : মরুভূমির ভিতরের কোনো কোনো জায়গায় জলের উৎস (আর্টেজীয় কূপ বা হ্রদ) থাকলে সেখানে গাছপালা, কৃষিকাজ গড়ে ওঠে। এই জায়গাগুলিকেই বলে মরূদ্যান। মরূদ্যান, মরুভূমি অতিক্রমকারী মানুষের কাছে স্বর্গের সমান।


প্রশ্ন ৭ মরূদ্যানে জনবসতি গড়ে ওঠে কেন?


উত্তর : মরূদ্যানে ভৌমজল পাওয়া যায়, ফলে সেখানে গাছপালা গড়ে ওঠে এবং কৃষিকাজ ও পশুপালনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। তাই মরূদ্যান জনবসতি গড়ে ওঠার সহায়ক।


প্রশ্ন। ৮ হামাদা কাকে বলে?


উত্তর : মরু অঞ্চলে বায়ুপ্রবাহ দ্বারা বালুকারাশি অপসারিত হওয়ার ফলে, নিম্নস্থ শিলাময় স্তর বেরিয়ে পড়ে। আবরণহীন কেবলমাত্র শিলা দ্বারা গঠিত এই মরুভূমিকে হামাদা বলে।


প্রশ্ন ১ আর্গ কী?


উত্তর : বিশালাকার অঞ্চলজুড়ে কেবলমাত্র বালি দ্বারা গঠিত মরুভূমিকে সাহারা আর্গ বলে। তুর্কিস্তানে একেই কুম বলে।

উদাহরণ-সৌদি আরবের বুব-আল-খালি হল পৃথিবীর বৃহত্তম আর্গ।


প্রশ্ন ১০ রেগ কাকে বলে?


উত্তর : বিভিন্ন আকৃতির


প্রস্তরখণ্ড দিয়ে ঢাকা মরুভূমিকে আলজিরিয়ার রেগ বলে। মিশর ও লিবিয়ায় এটিই সেরীর নামে পরিচিত।


প্রশ্ন ১১ বায়ুর মাধ্যমে অবঘর্ষ প্রক্রিয়া ভূপৃষ্ঠের সামান্য ওপরে কার্যকর কেন?


উত্তর : ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন অঞ্চল বায়ুর প্রকৃতি হওয়ায় এবং ভূমিতে ঝোপঝাড় থাকায় বায়ুর গতিবেগ কম হয় এবং বায়ুবাহিত পদার্থসমূহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। আবার ঊর্ধ্ব অংশে বায়ুর গতিবেগ বেশি থাকলেও বায়ুবাহিত পদার্থের পরিমাণ কম থাকে। তাই অবঘর্ষ প্রক্রিয়া ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন অঞ্চল বা ঊর্ধ্বে তত কার্যকর হয় না। ভূপৃষ্ঠ থেকে সামান্য ওপরে - ১ মিটার) এই প্রক্রিয়া সবচেয়ে বেশি কার্যকর হয়ে থাকে।


প্রশ্ন ১২ ব্লো আউট বা অপবাহন সৃষ্ট গর্ত কাকে বলে?


উত্তর : প্রবল বায়ুপ্রবাহে বালিস্তর অপসারিত হয়ে কোনো কোনো স্থানে গর্ত বা অবনমিত অঞ্চল সৃষ্টি করে। একেই অপবাহন সৃষ্ট গর্ত বা ব্লো আউট বলে।


প্রশ্ন ১৩ গৌর (Gour) কী?


উত্তর: বায়ুর গতিপথে কঠিন ও কোমল শিলায় গড়া কোনো বৃহৎ শিলাখণ্ড অনুভূমিকভাবে অবস্থান করলে নীচের কোমল অংশ বিভিন্ন ঋতুতে বায়ুর ঘর্ষণের ফলে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সরু স্তম্ভের মতো হয় এবং উপরের কম ক্ষয়প্রাপ্ত কঠিন অংশটি বিরাট আয়তন নিয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো দাঁড়িয়ে থাকে। স্তম্ভাকৃতি এই কঠিন শিলাখণ্ডকে গৌর বলে।


প্রশ্ন ১৪ জিউদে জিউগেন (Zeugen) কাকে বলে?


উত্তর: মরুভূমি বা মরুপ্রায় অঞ্চলে উপরের স্তরে কঠিন

শিলা ও নীচের স্তরে কোমল শিলা পর্যায়ক্রমে অনুভূমিকভাবে অবস্থান করলে অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় বায়ুর ক্ষয়কাজের ফলে কঠিন শিলাগঠিত অংশ অতি অল্প ক্ষয় পেয়ে চ্যাপটা ও প্রায় সমতল চূড়াবিশিষ্ট টিলার মতো দাঁড়িয়ে থাকে এবং কোমল শিলাস্তরগুলি বেশি ক্ষয় পেয়ে ফাটল বরাবর লম্বা খাত বা গহ্বরের সৃষ্টি হয়। এই রকম দুটি গহ্বর বা খাতের মধ্যে চ্যাপটা মাথা টিলার মতো যৌ ভূমিরূপ গঠিত হয় তাকে জিউগেন বলে। 


প্রশ্ন ১৫ ইয়ারদাং (Yardang) কী?


উত্তর: মরুভূমি বা মরুপ্রায় অঞ্চলে কঠিন ও কোমল

শিলাস্তরগুলি পাশাপাশি লম্বভাবে অবস্থান করলে দীর্ঘকাল ধরে অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় বায়ুর ক্ষয়কাজের ফলে কোমল শিলাস্তরগুলি দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে গহ্বর বা সুড়ঙ্গের আকার ধারণ করে এবং কঠিন শিলাস্তরগুলি পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বিভিন্ন মূর্তি আকৃতির শৈলশিরার মতো দাঁড়িয়ে থাকে। এই ধরনের ভূমিরূপ ইয়ারদাং নামে পরিচিত।


প্রশ্ন ১৬ ভেন্টিফ্যাক্ট (Ventifact) কী? 


উত্তর : বায়ুর প্রবাহপথে কোনো বৃহৎ প্রস্তরখণ্ড অবস্থান করলে এর প্রতিবাত পার্শ্ব দীর্ঘকাল ধরে অবঘর্ষ পদ্ধতিতে ক্ষয় হয়ে মসৃণ ও ছুঁচোলো হয় এবং শিলাস্তরটি ব্রাজিল দেশীয় বাদামের ন্যায় আকৃতি ধারণ করে। একে ভেন্টিফ্যাক্ট বলে।


প্রশ্ন ১৭ ড্রেইকান্টার (Dreikanter) কাকে বলে?


উত্তর : মরুভূমির কোনো প্রস্তরখণ্ড যদি বিভিন্ন ঋতুতে প্রবাহিত ভিন্নমুখী বায়ুপ্রবাহে অবঘর্ষ পদ্ধতিতে দীর্ঘকাল ক্ষয় হয়ে ত্রিকোণাকার বা ক্ষুদ্র পিরামিড আকৃতি ধারণ করে, তাকেই ড্রেইকান্টার বলে।


প্রশ্ন ১৮ ধান্দ কী?


উত্তর : ভারতের থর মরুভূমি অঞ্চলে অপসারণের ফলে ছোটো ছোটো গর্তের সৃষ্টি হয়। এই গর্তগুলিতে জল জমে সাময়িক হ্রদের সৃষ্টি হয়। এগুলি 'ধান্দ' নামে পরিচিত।


প্রশ্ন ১৯ ইনসেলবার্জ (Inselberg) কাকে বলে?


উত্তর মরুভূমি বা মরুপ্রায় শুষ্ক অঞ্চলে বায়ুপ্রবাহ ও অস্থায়ী জলধারা বা ওয়াদির মিলিত ক্ষয়কাজের ফলে অনেক সময় এইসব অঞ্চলে স্থানে স্থানে কঠিন শিলায় গঠিত অনুচ্চ ক্ষয়ীভূত পাহাড় টিলার আকারে বিক্ষিপ্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এইসব অনুচ্চ টিলাকে ইনসেলবার্জ বলে।


প্রশ্ন ২০ মেসা ও বিউট (Mesa and Butte) কী?


উত্তর : বায়ু ও জলধারার মিলিত কার্যে মরুভূমি অঞ্চলের উচ্চ মালভূমি ক্ষয় হয়ে বিচ্ছিন্নভাবে টেবিলের আকারে অবস্থান করলে তাকে মেসা বলে। মেসা ক্ষুদ্রাকৃতির হলে তা বিউট নামে পরিচিত।


প্রশ্ন ২১ পেডিমেন্ট (Pediment) কাকে বলে?


উত্তর : মরুভূমিতে উচ্চভূমি থেকে পাদদেশের দিকে মৃদু ঢালু। (ঢাল ১.৫০ – ৭০) ভূমিকে বলা হয় পেডিমেন্ট।


প্রশ্ন ২২ বালিয়াড়ি (Sand dunes) কী?


উত্তর : বায়ুপ্রবাহের দ্বারা বালুকারাশি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বাহিত হয়ে সঞ্চিত হওয়ার পর দীর্ঘ ও উচ্চ বালির স্তূপ গঠন করে। একেই বালিয়াড়ি বলা হয়। 


প্রশ্ন ২৩ কোথায় কোথায় বালিয়াড়ি দেখা যায়?


উত্তর : বালিয়াড়ি সাধারণত মরুভূমি (ক্রান্তীয় ও নাতিশীতোয়) মরুপ্রায় ও উপকূল অঞ্চলে গড়ে ওঠে।


প্রশ্ন ২৪ বার্খান (Barchan) কাকে বলে?


উত্তর: বায়ুর প্রবাহপথের সঙ্গে আড়াআড়িভাবে গড়ে ওঠা অর্ধচন্দ্রাকার বালিয়াড়িকে বার্খান বলে।


প্রশ্ন ২৫ সিফ্ বালিয়াড়ি (Seif dune) কী? *


উত্তর: বায়ুপ্রবাহের সমান্তরালে দীর্ঘ ও সংকীর্ণ শৈলশিরার মতো বালির পাহাড়গুলিকে সিফ্ বালিয়াড়ি বলে। এই বালিয়াড়ি দেখতে খানিকটা তলোয়ারের মতো হয়।


প্রশ্ন ২৬ টেরিস কী?


উত্তর : কেরেলর মালাবার উপকূলের গঠিত বালিয়াড়িকে স্থানীয় ভাষায় টেরিস বলে।


প্রশ্ন ২৭ প্রিয়ান কাকে বলে?


উত্তর : মরু অঞ্চলে বায়ুপ্রবাহের গতি পরিবর্তনের ফলে বালি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরে যায়। এই ধরনের বালিয়াড়িকে বলে অস্থায়ী বা চলমান বালিয়াড়ি। রাজস্থানের মরু অঞ্চলের এই ধরনের বালিয়াড়িকে প্রিয়ান বলে।


প্রশ্ন ২৮ লোয়েস (Loess) কী?


উত্তর: মরুভূমি ও মরুপ্রায় অঞ্চলে হলুদ ও ধূসর বর্ণের কোয়ার্টজ, ফেল্ডস্পার, ডলোমাইট ও অন্যান্য খনিজ সমৃদ্ধ শিথিল সূক্ষ্ম পলিকণার সঞ্চয়কে লোয়েস বলে।


প্রশ্ন ২৯ প্লায়া (Playa) কাকে বলে?


উত্তর : মরুভূমি অঞ্চলে উচ্চভূমি বেষ্টিত অবনমিত অঞ্চলে জল জমে যে সাময়িক হ্রদের সৃষ্টি হয়, তাকে প্লায়া বলে। এই প্লায়াই আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে বোলসন নামে পরিচিত।


প্রশ্ন ৩০ ডেজার্ট পেভমেন্ট (Desert pavement) কাকে বলে?


উত্তর : কেবলমাত্র নুড়ি ও পাথর দ্বারা গঠিত একটি এবড়োখেবড়ো অবশিষ্ট মরুভূমি অঞ্চলকে ডেজার্ট পেভমেন্ট বলে।


প্রশ্ন ৩১ বাজাদা (Bajada) কী?


উত্তর : প্লায়া ও পার্শ্ববর্তী অংশে স্বল্পমেয়াদি প্রবল বর্ষায় উৎপন্ন পলি জমে সৃষ্ট সমভূমি হল বাজাদা বা বাহাদা।


প্রশ্ন ৩২ ওয়াদি (Wadi) কাকে বলে?


উত্তর : মরুভূমিতে বৃষ্টির জলধারার ক্ষয়কাজের ফলে যে সমস্ত ছোটো ছোটো অনিত্যবহ ক্ষণস্থায়ী প্রকৃতির নদী বা শুষ্ক নদীখাতের সৃষ্টি হয়, তাদের ওয়াদি বলে। 


প্রশ্ন ৩৩ মরু সম্প্রসারণ (Expansion of Desert) বলতে কী বোঝ?


উত্তর : যে প্রক্রিয়ার দ্বারা উৎপাদনশীল ভূমি ক্রমশ সম্পূর্ণভাবে উৎপাদনে অক্ষম অনুর্বর মরুভূমিতে পরিণত হয়, তাকে মরুকরণ বা মরু অঞ্চলের সম্প্রসারণ বলে।


প্রশ্ন ৩৪ CAZRI-এর গুরুত্ব লেখো।


উত্তর : CAZRI-এর পুরো নাম হল Central Arid Zone Research Institute। এটি হল ভারতের একটি সংস্থা, যার সদর দপ্তর যোধপুরে অবস্থিত। এই সংস্থা দেশের মরুকরণ বা মরুভূমির সম্প্রসারণ বোধ করার সম্পর্কে গবেষণা চালায় ও গাছ লাগিয়ে নানা প্রকল্প রূপায়ণ করে।


প্রশ্ন ৩৫ উপকূল ও নদীর মোহানায় বালির সঞ্চয় দেখা যায় কেন?


উত্তর : উপকূল ও নদীর মোহানায় বালি তৈরি হয়েছে সিলিকেট


সমৃদ্ধ শিলা যান্ত্রিক ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। কোয়ার্টজ খনিজ রাসায়নিকভাবে পরিবর্তিত হয় না বলেই তা মোটা দানা বালিতে পরিণত হয়। কোনো কোনো উপকূলে চুনাপাথর (সাদাবালি) ও প্রবালের খোলক থেকেও বালির উৎপত্তি হয়েছে। এই কারণেই উপকূল ও নদীর মোহানায় বালির সঞ্চয় দেখা যায়।


প্রশ্ন ৩৬ উপকূলে কীভাবে বায়ু ভূমির পরিবর্তন ঘটায়?


উত্তর : উপকূল অঞ্চলে সমুদ্রের দিক থেকে জোরে বাতাস বয়। এই বাতাস উপকূলের বালিকে উড়িয়ে নিয়ে অন্য স্থানে সঞ্চয় করে বালিয়াড়ি তৈরি করে। তাই উপকূলে বায়ু সঞ্চয়কার্যের মাধ্যমে ভূমি গড়ে ওঠে-ক্ষয়কার্যের ফলে অতটা নয়। এইভাবেই উপকূলে বায়ু ভূমির পরিবর্তন ঘটায়।

Popular posts from this blog

ফরাসি বিপ্লবে দার্শনিকদের অবদান আলোচনা করো।

কার্যকারণ সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে হিউমের মতবাদটি আলোচনা করো।

নেপোলিয়নের পতনের কারণ সম্পর্কে আলোচনা করো।